স্পোর্টস ডেস্ক: মানসিক অবসাদ একটা মানুষকে মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিতে পারে। সম্প্রতি অবসাদের কারণে বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক সুশান্ত রাজপুতের আত্মহত্যা নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। ক্রিকেটাররাও এমন মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেন। তবে দলের প্রয়োজনে হয়তো মুখ ফুটে বলতে পারেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য সাহস করে কয়েকজন তাদের অবসাদের বিষয়টি জনসম্মুখে এনেছেন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল অন্যতম। দারুণ একটি মৌসুম কাটানোর পরও অবসাদের কারণে ক্রিকেট থেকে ছুটি নেন তিনি। এরপর তার পথ ধরে হেঁটেছেন আরও কয়েকজন।
এবার ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার নিক কম্পটন জানালেন, তিনি একদিন দু’দিন নয়, মানসিক অবসাদের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন ৫-৬টি বছর। ভাগ্য ভালো, খারাপ কিছু করে বসেননি।
কম্পটনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটাই কেটেছে উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে। ২০১২ সালে ভারত সফরে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। এক বছর দলের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৩-১৪ অ্যাশেজ সিরিজের ঠিক আগে বাদ পড়ে যান। ২০১৫ সালে অল্প সময়ের জন্য ফিরেছিলেন, ফের বাদ পড়েন ২০১৬তে।
এমন ধাক্কা জীবনটা একদম দুর্বিসহ করে তুলেছিল কম্পটনের। ক্রীড়া উপস্থাপক জশ কাশিকরের সঙ্গে এক ইনস্টাগ্রাম লাইভে সাবেক এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান জানালেন, গত ৫-৬টা বছর কি একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি।
কম্পটন বলেন, ‘সবার ক্যারিয়ারে এমন একটা সময় আসে, যখন সব কিছু ভীষণ কঠিন হয়ে যায়। যখন আমি ইংল্যান্ড দল থেকে বাদ পড়ি, আমারও গত ৫-৬টা বছর মানসিক অবসাদের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। এটা এমন একটা ব্যাপার যেটা গোপনে ক্ষতি করে, কিন্তু আপনি অন্যদের সঙ্গে সহজে শেয়ার করতে পারবেন না। তাই এটার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে নতুন জীবনে আসতে সময় লেগেছে।’
দলে কোনোমতে ফিরে আসার পর দ্বিতীয়বার বাদ পড়াটাই মেনে নেয়া কঠিন ছিল কম্পটনের। তিনি বলেন, ‘আমার অনেক ইনজুরি ছিল। ক্যারিয়ারের শেষ ভাগে এসে সব যেন একসঙ্গে জেঁকে ধরল। নিজেকে অনুপ্রাণিত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল আমার জন্য। ইংল্যান্ড দল থেকে দ্বিতীয়বার বাদ পড়া ছিল কঠিনতম। তবে আমার মনে হয়, সবারই এমন সময় যায়। উদ্যম ফিরে পাওয়াটাই আসল। আমি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অংশটায় এসে নিজেকে এগিয়ে নিয়েছি।’
৩৬ বছর বয়সী সাবেক এই ক্রিকেটার মনে করেন, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তরুণদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তিনি নিজে কখনও এতে দ্বিধা করেন না। কম্পটনের ভাষায়, ‘আমি এই বিষয়টা নিয়ে তরুণদের সঙ্গে কথা বলাটা ভালো মনে করি, এতে তাদের সাহায্য হয়। এতে করে কাঁধ থেকে বোঝাটা নেমে যায়, সব কিছু স্বাভাবিক মনে হয়। উপলব্ধি করা যায় আমরা মানুষ এবং আমাদের এমন সংগ্রাম করতে হয়ই। সেটা খেলা হোক, ব্যবসা হোক কিংবা অন্য কিছু। এটাই জীবন।’
Leave a Reply