ষ্টাফ রিপোর্ট: ঢাকার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গু বিষয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় কথা বলেন। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনে শতভাগ নিরাপত্তা দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন- নাপার ওষুধের মধ্যেও ২০টি সাইড ইফেক্ট রয়েছে। সাইড ইফেক্ট ছাড়া ভ্যাকসিন কোনোভাবেই সম্ভব না, এটা কমপ্লিটলি ইমপসিবল। অত্যন্ত স্বল্প সময়ে ভ্যাকসিনটি মার্কেটে আনা হয়েছে। শতভাগ নিরাপত্তা কোনভাবেই দেয়া সম্ভব নয়। তারপরও প্রত্যেকের নিজেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার ক্ষমতা তার আছে। আমরা চেষ্টা করবো স্বাধ্যমত মানুষকে আশ্বস্ত করার। তবে আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে প্রথমে আমরা কিছু ভলান্টিয়ারকে এই ভ্যাকসিন দিতে পারি। জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই তালিকার বাইরেও কিছু ভলান্টিয়ারদের দেয়ার চিন্তাভাবনা করছি, এ ব্যাপারে হয়তো খুব তাড়াতাড়িই জানা যাবে। যারা করোনায় আক্রান্ত থাকবেন তারা এই ভ্যাকসিন পাবেন না। সুস্থ হওয়ার চার মাস পর আমরা তাকে এই ভ্যাকসিন দেব কারণ অলরেডি তার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছ। ভ্যাকসিনের একটা রিস্ক অবশ্যই থাকবে, ফাইজারের ভ্যাকসিনেও রিঅ্যাকশন হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে এই রিস্ক নিয়েই মানুষের শরিরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ হচ্ছে, কিছু ঝুঁকি আমাদের নিতেই হবে।করোনা ভ্যাকসিন প্রথম ধাপে চিকিৎসকদের দেয়া হবে।
চিকিৎসকরা এই ভ্যাকসিনে আস্থা রাখতে পারছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- ভ্যাকসিনে আস্থার চেয়ে সঙ্কট বেশি, আস্থার সঙ্কট এই মূহুর্তে একটি বৈশ্বিক সমস্যা। কারণ এতো কম সময়ের মধ্যে গবেষণা করে ভ্যাকসিন কখনই আনা হয়নি। আমরা যখন একটা ভ্যাকসিন আনি মিনিমাম দুই-তিন বছর গবেষণা করে, জনগণের ওপর প্রয়োগ করে, তার প্রতিক্রিয়া দেখে আনা হয়। কিন্তু এখন একটা বৈশ্বিক চাহিদার কারণে সব কোম্পানি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ভ্যাকসিনটি মার্কেটে এনেছে। সাধারণত ডাব্লিউএইচও এতো স্বল্প সময়ে কখনই একটি ভ্যাকসিনের অনুমতি দেয় না। এখানে বৈশ্বিক ক্রাইসিস তাই নিয়মের বাইরেও অনেক সিদ্ধান্ত হয়তো তারা নিয়েছে। জনগনের আস্থার জন্য সৌদি বাদশা নিজে ভ্যাকসিন নিয়ে সবাইকে দেখিয়েছেন, রানী এলিজাবেথও নিয়েছেন। আস্থার অভাব কাটিয়ে উঠতেই তারা সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন, এই আস্থার অভাব আমাদের দেশেও রয়েছে। নতুন সব জিনিসে আস্থার অভাব থাকেই, আমি আশা করবো এখানে কোনো প্রকার আস্থার অভাব থাকবে না কারণ যারা অনুমতি দিয়েছে অত্যন্ত গবেষণা করে অনুমতি দিয়েছে। ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড আগে ভ্যাকসিন দিয়েছে, আমরা পরে নিচ্ছি। এই পরে নেয়ার একটা কিন্তু বেনিফিট আছে, তারা ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে কিনা সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা যে ভ্যাকসিন নেব, সেটা অলরেডি ভারতে দেয়া শুরু হয়েছে। আমরা যেহেতু প্রতিবেশী দেশ তাই কোনো সমস্যা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে আমরা কিন্তু বুঝতে পারবো।
ভ্যাকসিন উপজেলা পর্যায়ে কিভাবে যাবে জানতে চাইলে তিনি আরোও বলেন- আমাদের এখানে ভ্যাকসিন পাঠানোর যে পদ্ধতি আগে থেকেই চলে আসছে সেই পদ্ধতিটাই আমরা মেইনটেইন করবো। ভ্যাকসিন যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে সরবরাহ করবে তারা জেলা পর্যন্ত ভ্যাকসিনটা পৌঁছে দেবে। আমাদের সরকারি দায়িত্ব হচ্ছে জেলা থেকে উপজেলা এবং উপজেলা থেকে ভ্যাকসিন কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। এটার জন্য পর্যাপ্ত ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম দীর্ঘদিন যাবত আমাদের চালু আছে, জেলা থেকে উপজেলায় ভ্যাকসিন চলে যাবে, উপজেলা থেকে ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার বক্সে যেদিন যে কেন্দ্রে প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
Leave a Reply