স্টাফ রিপোটারঃ
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ চেয়ে দেশের ২৬ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি প্রদান করেছেন। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এ বিবৃতি দেন তাঁরা। সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার সাত বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ৬ মার্চ। অথচ এ দীর্ঘ সময়েও আলোচিত এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এইটি অত্যন্ত পরিতাপের ও বেদনার। অথচ এ হত্যাকাণ্ডের বছর না যেতেই এর তদন্তকারী সংস্থা হত্যার সকল রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছিল, যা আমরা সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি। তারা অপরাধী, অপরাধের স্থান-কাল-কারণসহ বিস্তারিত প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তার পরে দীর্ঘ সময়েও সে অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি।’
বিবৃতিতে তাঁরা আরও বলেন, ‘এ বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা যেমনি উৎসাহিত হচ্ছে, অপরদিকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। একটি স্বাধীন দেশে এমনটি আমাদের কাম্য নয়। আমরা অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে এ বিচার-প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর যথাযথ নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।,
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- ভাষাসৈনিক, লেখক ও গবেষক আহমদ রফিক, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রবীন্দ্র-গবেষক শিক্ষাবিদ ড. সনজীদা খাতুন, ভাষাসৈনিক ও সাংবাদিক কামাল লোহানী, শিক্ষাবিদ, কথা-সাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার, শিক্ষাবিদ ড. হায়াৎ মামুদ, লেখক, গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, দৈনিক সংবাদ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, মানবাধিকার সংগঠক এড. সুলতানা কামাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, শিক্ষাবিদ, লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক ড. সফিউদ্দিন আহমদ, শিক্ষাবিদ অধ্যপক শফি আহমেদ, নারী-অধিকার কর্মী, লেখক ড. মালেকা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, লেখক-গবেষক মফিদুল হক, নারী সংগঠক আয়শা খানম, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অধ্যপক এম এম আকাশ।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এর পর থেকে ত্বকী হত্যার দ্রুত অভিযোগপত্র প্রদান, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
Leave a Reply