নিজেস্ব প্রতিনিধি: প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের হটস্পট খ্যাত নারায়ণগঞ্জে দিন করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। কোনোভাবেই যেন সেই হটস্পট থেকে বেরিয়ে আসার কোনো লক্ষ্যণ দেখা যাচ্ছেন। গত কয়েকদিন ধরেই আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে শতাধিকের ঘরে। এমনতাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে দেশের সর্বোচ্চ মহল। ফলে পরিস্থিতি বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জে ফের আসতে পারে লকডাউন।
গত কয়েকদিনে সিভিল সার্জনের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা যায়, গত ৩০ মে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জেলায় ২০৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদিন করোনায় আক্রান্ত ১৫২ জন শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। সুস্থ হয়েছিলেন ১২ জন।
এরপর গত ৩১ মে রোববার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৯৪৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এদিন করোনায় আক্রান্ত ১০৪ জন শনাক্ত হয়। ২৪ ঘন্টায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৬ বছর ও ৭৩ বছর বয়সী এবং রূপগঞ্জে ৬৫ বছর বয়সী পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৩০ জন।
সবশেষ ১ জুন সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৫২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এদিন করোনায় আক্রান্ত ১৩৫ জন শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের ২ জন আড়াইহাজার উপজেলার। সুস্থ হয়েছেন ৪০ জন। এ নিয়ে জেলায় ১২৮২১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮২ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৮০৬ জন।
এভাবে দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। সেই সাথে সারাদেশের পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করেছে দেশের সর্বোচ্চ মহল।
যার ধারাবাহিকতায় ১ জুন সোমবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উচ্চ পর্যায়ের সভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন এলাকাকে তিনটি জোনে ভাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। এসব জোনের নাম হবে ‘রেড জোন’, ‘ইয়েলো জোন’ ও ‘গ্রিন জোন’। এসব জোন করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে এক জোন থেকে আরেক জোনে (ভালোর দিকে) নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এখনো জোন করা হয়নি। ঢাকা, নারায়াণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে। যদি কোনো জোন রেড হয়, সেগুলো রেড করা হবে।
ওই বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, যেসব এলাকায় বেশি সংক্রমিত হবে, তা কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখা (লকডাউন) হতে পারে। ফলে সংক্রমনের দিক দিয়ে নারায়ণগঞ্জ এগিয়ে থাকায় নারায়ণগঞ্জ আবার লকডাউনের ঘোষণার আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা যেভাবে পরামর্শ দেবেন, সেভাবেই কাজ করা হবে।
সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উচ্চ পর্যায়ের সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত এর আগে ২৬ মার্চ থেকে নারায়ণগঞ্জের সবকিছু বন্ধ করা হয়। ঘোষণা করা হয় লকডাউন। পরবর্তীতে ১০ মে থেকে সীমিত আকারে সব কিছু খুলতে শুরু করে। পরে ৩১ মে থেকে অফিস আদালত আর ১ জুন চালু হয় গণপরিবহন।
Leave a Reply