ষ্টাফ রিপোর্টঃ
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বিকেলে হকার নেতা আসাদ’র মুক্তির দাবী ও পূণর্বাসন ছাড়া কোনো হকার উচ্ছেদ চলবে না এই দাবীতে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। হকাররা এদেশের নাগরিক। দেশের যেকোন প্রান্তে এরা বসে উপার্জন করতে পারবে। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার থেকে হকারদের কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না। আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মুক্ত করতে প্রয়োজনে আইনী লড়াই চালাবো, বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি’র জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম এসব কথা বলেছেন।
সমাবেশের শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল ফটকে পুলিশ সহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। যেই হকাররা প্রবেশ করছিলো, তাদের নাম পরিচয় লেখা হচ্ছিলো। এতে ভয়ে সাধারণ হকাররা ঢোকার সাহস পায়নি। এরপর হাফিজুল ইসলাম নিজের পরিচয় দিয়ে ঢোকার পরে পুলিশের সাথে কথা বললে সবাইকে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়।
সভাপতি হাফিজুল ইসলাম আরও বলেন- আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী আপনাদের প্রতিপক্ষ না। তাদের যদি আপনাদের দমন করার ইচ্ছা থাকতো, তাহলে আপনারা এখানে সমাবেশ করতে পারতেন না। আমাদের এই আন্দোলন দীর্ঘ দিনের। স্বৈরাচারী এরশাদ যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন তিনি বাংলাদেশ সুন্দর করার নামে দেশের সব রাস্তা থেকে হকার উচ্ছেদ করেন, বস্তি উচ্ছেদ করেন। স্বৈরশাসকরা মুষ্টিমেয় কিছু মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। আমরা চাই, আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ সুন্দর বাংলাদেশ হোক কিন্তু দুই এক ভাগ মানুষের জন্য সুন্দর বাংলাদেশ গড়বেন, বাকি ৯৯ ভাগ মানুষের জন্য অসুন্দর বাংলাদেশ বানাবেন, এই সুন্দর বাংলাদেশ আমরা চাই না। সারা দেশবাসীকে অবহিত করা হয়েছে, হকারদের পূণর্বাসন করা হয়েছে, তাদের জন্য মার্কেট করা হয়েছে। কিন্তু ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যে হকার্স মার্কেট বানানো হয়, সেখানে হকারদের ব্যবসা করার সুযোগ নাই। একজন মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তাকেও সাড়ে সাত ফুট জায়গা দেয়া হয় আর হকারদের ব্যবসা করার জন্য মাত্র সাড়ে ৩ ফুট জায়গা দেয়া হয়েছে। আমাদের ন্যায্য দাবী, হকারদের পুণর্বাসন করেন। এই ফুটপাতে বসে ব্যবসা করার খায়েশ গরীব মানুষের নাই। যদি পুণর্বাসন করা হয়, গরীব মানুষ কষ্ট করে আর ফুটপাতে আসবে না। এই হকাররা কেউ সূদের টাকায়, কেউ মায়েদের স্বর্ণ-গয়না বিক্রি করে ব্যাবসার টাকা যোগায়। এদের টার্গেট সরকার পতন বা পরিবর্তন না, তাদের টার্গেট রুজি রুটির ব্যবস্থা করা।
পুলিশের পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ্ জামান, ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান, ডিবির অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন।
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন’র সঞ্চালনা আরও উপস্থিত ছিলেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম বাবুল, সদস্য দিলীপ কুমার দাস, সাধারণ হকার মোঃ অনিক প্রমূখ।
Leave a Reply