স্টাফ রিপোর্ট: পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপ-নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করেছে বিএনপি। একই সাথে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দাবি আদায়ে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তিনি।
এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামীকাল ১৯ অক্টোবর সোমবার সারা দেশে মহানগর ও জেলা সদরে এবং ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার থানা/উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ মানববন্ধনের কর্মসূচি।
রোববার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, সম্প্রতি পাবনা এবং গতকাল ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ এর জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং সরকার দলীয় সন্ত্রাসী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মতই ত্রাস সৃষ্টি করে এবং কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে সীল মেরে বিরোধী দলের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দিয়ে ভোট ছিনতাই করে। নির্বাচন কমিশন নির্বীকার দর্শকের ভূমিকা পালন করে। রিটানিং অফিসার ধানের শীষের প্রার্থীদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি। বিনা ভোটে স্বঘোষিত সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ভোট ডাকাতির কৌশলে জনগণকে আবারও প্রতারিত করল। অযোগ্য এবং সরকারের বশংবদ নির্বাচন কমিশন ক্রীড়নক এর থেকে এই ভূমিকা পালন করছে। সুপরিকল্পিত ভাবে তারা বাংলাদেশের জনগণকে ভোটের অধিকার বঞ্ছিত করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই অবৈধ সরকার রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে একদিকে নজীর বিহীন দূর্নীতি ও দুঃশাসন অন্যদিকে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে ফ্যসিস্ট রাজত্ব কায়েম করেছে।
তিনি বলেন, পাবনা- ৪ এর নির্বাচনের ২ দিন আগে থেকেই নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়ে বিরোধী দলের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার হয়রানী ও ভীতি প্রদর্শন করেছে এবং নির্বাচনের দিনে ভোট কেন্দ্রগুলো দখল করে ধানের শীষের এজেন্টদের মার ধর করে বের করে জাল ভোট দিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন ইভিএম দিয়ে ভূয়া ফলাফল তৈরী করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে।
একই ভাবে নওগাঁ -৬ উপ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়। এখানে আওয়ামী সন্ত্রাসী, পুলিশ, বিডিআর ও র্যাব যৌথ ভাবে ধানের শীষের ভোটার ও কর্মীদের কেন্দ্র থেকে ত্রাস সৃষ্টি করে বের করে দেয়। নির্বাচন কর্মকর্তাদের সহায়তায় কাল্পনিক ফলাফল তৈরী করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা-৫ ডেমরা এর ব্যতিক্রম নয়। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রায় প্রতিদিন আওয়ামী প্রার্থী সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, এমন কি প্রচারের শেষ দিনে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর পথ সভায় হামলা করে। ভোটের দিন সকাল থেকেই ভোট কেন্দ্র গুলো থেকে এজেন্টদের জোর করে বের করে দেয়। ১৬২টি কেন্দ্র থেকে সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যেই সব এজেন্টদের বের করে দেয় এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয় না। এরপর একইভাবে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়ার পরেই নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যবস্থা তো নেন নি উপরন্ত প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা নিলর্জ্জের মতো বলেন যে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের দূর্ভাগ্য, যে জনগণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য ৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলেন সেই জনগণ আজ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্ছিত। আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি এবং সেই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবী জানাচ্ছি।এই দাবিতে তিনি দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
Leave a Reply