বর্তমান খবর রিপোর্ট :
একটি দুর্ঘটনায় বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে ইমনসহ ১০জন পরপারে চলে গেছে। ইমনের হবু শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার আগেই একটি দুর্ঘটনায় সব কিছু ওলোটপালোট করে দিয়েছে। আর কাতার প্রবাসী ইমনের পরিবারের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়ে গেছে। ইমনের বাড়িতে বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে শোকের ছায়া নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পাগলা মুসলিমপাড়া এলাকা থেকে সিলেটের সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
মাত্র এক মাস আগেই মধ্যপ্রাচ্যের কাতার থেকে দেশে এসেছেন বিয়ে করবেন প্রবাসী ইমন খান (২৫)। শুক্রবার হবু স্ত্রী জেরিন তালুকদারকে আনুষ্ঠানিকভাবে আংটি পড়ানোর কথা ছিলো। বাবা ছোট ভাইসহ আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে সিলেটের সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হবু শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় বরসহ ৯ জন নিহত হয়েছে।
নিহতরা হলো-ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে ইমন খান (২৫) (বর), মৃত আশরাফ আলী তালুকদারের ছেলে আব্বাস উদ্দিন (৫৫, বরের বাবা), বরের ছোট ভাই রাব্বী (২০), মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে সুমনা আক্তার (৩৫), তোতা খানের ছেলে ইমরান হোসেন (১৬), আবুল হোসেনের ছেলে রাজিব (২৫), মজিবুর রহমানের স্ত্রী আসমা আক্তার (২৫), আব্দুল গনির ছেলে খলিলুর রহমান (২৫), বেলায়েতের মেয়ে খাদিজা আক্তার (৪) ও হাজী মহসিন (৭০)। এ ঘটনায় আহতরা হলো নাদিম ৩৬ (ড্রাইভার), আবুল হোসেন (৫৫), রফিক (৪৫)।
নিহত ইমন খানের ছোট ভাই আব্দুল্লাহ জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। তারা স্বপরিবার ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া বসবাস করে। তার বড় ভাই ইমন কাতারে ছিলো। বিয়ে করার উদ্দেশে গত এক মাসে ছুটিতে দেশে আসে। ইমনকে ধুমধাম করে বিয়ে দেয়ার পরিকল্পনায় আয়োজন শুরু করে।
সুনামগঞ্জের কনে পছন্দ হলে শুক্রবার কনেকে আংটি পড়ানোর অনুষ্ঠানে দূরের পথ হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি ভাড়া করা গাড়িতে নাইম খানসহ ১৩ জন সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু কনের বাড়ি যাওয়ার আগে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে নাইম, তার বাবা, ছোট ভাই সহ ৯ জন মারা যায় এমন সংবাদ পাই। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর শুক্রবার ভোরে আমাদের বাড়ির লোকজন লাশ আনতে সুনামগঞ্জে রওনা হয়।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার দুপুরে আরেকজনের মৃত্যুর সংবাদ পাই। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ইমন ভাইয়ের বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। আল্লাহর কাছে কী অপরাধ করলাম আমাদের পরিবারকে দুই টুকরো করে দিয়ে গেলো।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মোবাইল ফোনে পুলিশকে জানিয়েছেন ইমনের বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল। হবু কনেকে আংটি পরাতে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যাচ্ছিলেন তারা। আর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশগুলো উদ্ধার করে শেরপুর হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে নিহতদের স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
Leave a Reply