মোঃ মাসুদ রানাঃ
ভারতে বাঁধ ভেঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণের কারণে হুহু করে বাড়ছে তিস্তায় পানি, প্রতি সেকেন্ডে প্রবাহিত হচ্ছে সাড়ে ২২ লাখ লিটার পানি। যেকোনো মূহর্তে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে তাই নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জল কপাট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী,টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা, শোলমারী ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫ শত পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুত্রে জানা যায়, ভারতের সিকিম রাজ্যের চুংথাং হ্রদের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় গজলডোবা, দোমোহনী, মেখলিগঞ্জ এবং ঘিশ নদীতে আকস্মিক ভাবে পানি বাড়তে শুরু করে। গজলডোবার উজানে দোমোহনী নদীতে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দোমোহনী হয়ে তিস্তায় পানি প্রবেশ করছে, বর্তমানে তিস্তায় প্রতি সেকেন্ডে প্রবাহিত হচ্ছে সাড়ে ২২ লাখ লিটার।
ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সুমন মিয়া জানান, সকালের দিকে চরে গরু বেধে আসলাম আশার ঘন্টাখানেক পরেই এতো পানি বৃদ্ধি পেলো যে চর গুলো চোখের পলকে পানি বন্দি হয়ে গেলো।
একই গ্রামের বাসিন্দা মোবারক আলী জানান, সকালবেলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে মূহর্তের মধ্যে চরের ধান ক্ষেত তলিয়ে যায়।
ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, উজানের ঢল, অবিরাম বৃষ্টিতে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গ্রামের প্রতিটি বাড়ি হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান,ভারতে বাঁধ ভাঙার কারণে তিস্তায় পানি প্রবেশ করছে, তিস্তায় যেকোনো সময় বিপৎসিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। দুপুর ১২ টায় পানির লেভেল ছিল ৫১ মিটার দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার, পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিকেল তিনটায় ৫২ মিটার দশমিক ৮ সেন্টিমিটার হয় যা বিপৎসিমার ৭ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ নেই।
Leave a Reply