কুমিল্লা প্রতিনিধি:
ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে কুমিল্লার বরুড়া ফেয়ার হসপিটাল বন্ধ ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। ভুল চিকিৎসার স্বীকার বরুড়া উপজেলার পৌর এলাকার কাসেম শফিউল্লাহ কাজল এর মেয়ে নাফসি জাহান। নাফসি জাহানের সহপাঠিরা রোববার বরুড়া বাজারে এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, গত ৯ আগষ্ট নাফসির ভাই তানজিদ শফি অন্তর ফেয়ার হসপিটালের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও সার্জন ডাঃ মোঃ রাশেদ উজ জামান (রাজিব) এর বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে ভুল চিকিৎসার জন্য এই মামলা করেন।
সরেজমিনে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল ২০২০ ইং তারিখে বরুড়া মৌলভীবাজারে অবস্থিত ফেয়ার হসপিটালে তানজিদ সফি অন্তর এর বোন নাফসি জাহান পেটের ব্যাথা ও বমির উপসর্গ নিয়ে ডাঃ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। এ সময় তিনি নাফসি জাহানকে কোনো প্রকার পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়াই তার পেটে এ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে বলেন এবং ডাঃ রাশেদ উজ জামান রাজিবকে দিয়ে অপারেশন করান। অপারেশন শেষে ডাঃ ইকবাল ও ডাঃ রাজিব অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে রোগীর ভাই তানজিদ সফি অন্তরকে বলেন, আপনার বোনের এ্যাপেন্ড্রিসাইটিজ হয়নি তার পেটে ৫/৫ সাইজের ওভারিয়ন চীষ্টে হয়েছে। ভয়ের কোনো কারন নাই, এটা সাধারনত সব মেয়েদেরই হয়ে থাকে। এটা কেটে ফেলা হয়েছে। পরে ২১ এপ্রিল আবারও অপারেশনের স্থানে প্রচন্ড ব্যাথা হলে নাফসি ডা: ইকবালের কাছে আসেন। তিনি নাফসিকে দেখে সেলাইয়ের স্থানে পুঁজ হয়েছে তাই পুনরায় ড্রেসিং করতে বলেন। গত ২৬ এপ্রিল এবং ৫ জুন আবারও নাফসি সেলাইয়ের স্থানে ব্যাথা নিয়ে ডাঃ ইকবালের কাছে আসেন। ডাঃ ইকবাল তাকে নিয়মিত ড্রেসিং করে এন্টিবায়োটিক ও ব্যাথার ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যান। পরবর্তীতে নাফসির পেটের ব্যাথার সাথে জ্বরও বাড়তে থাকে। ১৪ জুন আবারও ওই একই ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি নাফসিকে আল্ট্টাসনোগ্রাফি ও পশ্রাবের পরীক্ষার রিপোর্টে তার ইনফেকশন হয়েছে বলেন এবং হাই এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেতে বলেন। ২৪ জুন নাফসির পিরিয়ড এর সাথে অপারেশনের স্থানে প্রচন্ড ব্যাথা আরম্ভ হলে আবারও ফেয়ার হসপিটালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে আবারও নাফসির পেটে বেশি ব্যাথা দেখা দিলে ৭ জুলাই কুমিল্লা শহরের শেফা ডায়াগনস্টিক ও মেডিনোোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। এতে দেখা যায় নাফসির পেটে অপারেশনের স্থানে নরম তুলতুলে কিছু একটা আছে।
এ ঘটনা নাফসির ভাই আদালতে মামলা করেন। মামলা প্রত্যাহার করতে ডাক্তার ইকবাল ও ফেয়ার হসপিটালের লোকজন বিভিন্ন ভাবে নাফসির পরিবারকে চাপ ও হুমকি ধমকি দেয়। এর প্রতিবাদে নাফসির সহপাঠীরা এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। উল্লেখ্য যে বরুড়া ফেয়ার হসপিটাল ও ডাঃ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক রোগীকে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে মামলা ও জরিমানা হয়েছে।
Leave a Reply