ষ্টাফ রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের তৈরি ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ দেশে আমদানির অনুমোদন দিয়েছে । পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেনের নাগরিকদের প্রয়োগের জন্যই কেবলমাত্র এ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হয়। স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিনের চালান দ্রুত দেশে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাশিয়ার করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫, সোভিয়েত আমলে মহাকাশে পাঠানো যানের নামে এই ভ্যাকসিনের নাম করা হয়। ২৬ জানুয়ারি রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ এর অনুমোদন দিয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের মিত্র দেশ ইরান। রাশিয়া গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার অন্তঃবর্তী ফলে ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করে গত আগস্টে এর অনুমোদন দেয়। ভ্যাকসিনটি অ্যাডেনোভাইরাস থেকে তৈরি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিতে হয়। গত ডিসেম্বরে বেলারুশ এবং আর্জেন্টিনাতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে ভ্যাকসিনটি। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা এখনও চলমান রয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির চিকিৎসক এবং শিক্ষকদের শরীরে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।
রাশিয়া, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশগুলো, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হাঙ্গেরি, সৌদি আরব এবং লাতিন আমেরিকার অনেক দেশে স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন শিগগিরই বিতরণ শুরু হবে বলে জানিয়েছে মস্কো। তাদের এই ভ্যাকসিন ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
রাশিয়া সরকার বলছে- বিশ্বজুড়ে প্রাথমিকভাবে ১২০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের চাহিদা পাওয়া গেছে তবে এই চাহিদা ২৪০ কোটিতে উন্নীত হতে পারে। ভ্যাকসিনের চাহিদার কারণে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চায় মস্কো।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাশিয়ার স্টেট অটোমিক এনার্জি করপোরেশন (রোসাটম) কে দেয়া বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেনের নাগরিকদের প্রয়োগের জন্য এক হাজার ডোজ স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। চিঠিতে এই অনুমোদনের সঙ্গে তিনটি শর্তও দেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো—
# আমদানিকৃত টিকা শুধুমাত্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেনের নাগরিকদের প্রয়োগ করতে হবে।
# ইস্যু করা এই এনসিও ইস্যুর তারিখ থেকে পরবর্তী ছয় মাস বলবৎ থাকবে।
# টিকাটি ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অধিদপ্তর দায়ী থাকবে না। রাশিয়ার স্টেট অটোমিক এনার্জি করপোরেশন এর সকল দায়-দায়িত্ব বহন করবে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগতির জন্য বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে চিঠির অনুলিপি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঢাকায় রুশ দূতাবাসে পাঠানো হয়।
Leave a Reply