স্টাফ রিপোর্টার: ‘ গরীবের জন্য ত্রাণ, ধনীরা তো এমনিতেই ধনী। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষ তাদের বর্তমান অবস্থা কী? এটা কি কেউ খবর রাখে। তারা না লাইনে দাঁড়াতে পারে, না পারে কারো কাছে হাত পাততে! তাই এ পথ।’
কথাগুলো নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ওবায়দুল হক (৪৭) এর। গতকাল রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাঢ়া চত্বরের সামনে হাতে ব্যানার নিয়ে দাড়িয়ে সাদা কাপড় পরিধেয় অবস্থায় হাতে ‘করোনা বনাম ক্ষুধা বনাম লকডাউন’ ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। নগদ টাকার আবেদন জানিয়ে একটি মোবাইল নাম্বারসহ মাথার ওপরে থাকা ফেস্টুনে লেখা “Money Please”- ।
ওবায়দুল হক জানান, গত ২৬ তারিখ থেকে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিল্প-কারখানা, হোসিয়ারী বন্ধ করে দেয়ায় তার উপার্জনের একমাত্র উৎসটি বন্ধ হয়ে যায়। আমি একজন হোসেয়ারী শ্রমিক। বেতনভুক্ত কর্মচারী না হওয়ায় মাসিক বেতন পাওয়ারও কোনো আশা নেই। এমন অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ দুর্বিসহ অবস্থায় আছি। কোনো রকম করে ধার দেনা করে দিন চলছে। তবে তাও এখন শেষ পর্যায় তাই কোনো পথ না পেয়ে রাস্তায় দাড়িয়েছি। কেউ যদি সাহায্যে করে।
ওবায়দুল হক বলেন আমার এই আবেদন শুধুমাত্র আমার জন্য নয়। এ আবেদন ওই সকল পরিবারগুলোর জন্য যারা মান-সম্মান, চক্ষুলজ্জার ভয়ে কারো কাছে হাত পাততে পারে না। অথচ দিনের দিন না খেয়ে কাটাচ্ছে। আমাদের সমাজে এমন অনেক পরিবার আছে যারা এই করোনা দুর্যোগপূর্ণ সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনের পর দিন না খেয়ে কাটাচ্ছে। যাদের জন্য কোনো ত্রাণ বরাদ্দ হয় নি, আর হলেও বা তারা পায়না। সরকারের কোনো প্রনোদনার প্রস্তাবও তাদের জন্য আসে নি। তাহলে এ মানুষগুলো যাবে কোথায়?
প্রসঙ্গত, ১২ এপ্রিল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১০৭ জন, এবং আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন। প্রথমে রেডজোন (ক্লাস্টার এরিয়া) এবং পরে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করে পুরো নারায়ণগঞ্জকে লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হয় (অবরুদ্ধ) ৭ এপ্রিল রাতে। মহামারী কোভিড-১৯ এর কড়াল ছোবলে একের পর এক ঝরে যাচ্ছে প্রাণ। লকডাউনে কষ্টে আছে নিন্ম আয়ের মানুষ। সরকারি তরফ থেকে ত্রাণ বিতরণ করলেও তা প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রতুল।
Leave a Reply